শিরোনাম
নবীগঞ্জ থানার ইনাতগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা আটক ৮ সিলেটে ৩ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ডিজিটাল সুরক্ষা-নিরাপত্তা শীর্ষক কর্মশালা ও ইফতার অসুস্থ আলহাজ্ব সৈয়দ মকবুল হোসেন মাখন মিয়ার শয্যাপাশে সদর দক্ষিণ নাগরিক কমিটি’র নেতৃবৃন্দ লাইফ সাইন্স মেডিকেল টেকনোলজি ট্রেনিং ইনস্টিটিউট এর উদ্যোগে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালিত হয়েছে কক্সবাজারে সামরাই খাল উদ্ধারে পরিবেশবাদী সংগঠনের মানববন্ধন ও বিশ্ব পানি দিবস পালিত চৈত্রের বৃষ্টি, আমের জন্য আশীর্বাদ না অভিশাপ ভারতীয় চলচ্চিত্রের অভিনেত্রী রানী মুখার্জীর শুভ জন্মদিন আজ মা’গো———- ওও —————মা’গো নবীগঞ্জে বাগাউড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ জসিম উদ্দিন (সেলিম) এর দুর্নীতি অনিয়মের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের নির্দেশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সিরাজগঞ্জের পাঙ্গাঁসীতে সরকারি রাস্তা দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণের তদন্ত করলেন উপজেলা এসিল্যান্ড
বুধবার, ১০ এপ্রিল ২০২৪, ১০:২৪ পূর্বাহ্ন

পেঁয়াজের বাজার আবারও অস্থির, কঠোর অবস্থানে সরকার

রিপোটারের নাম
প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০
পেঁয়াজের বাজার আবারও অস্থির
পেঁয়াজের বাজার আবারও অস্থির

বিজ্ঞাপন

পেঁয়াজের পুরনো সিন্ডিকেটটি আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। গত বছরের এই সময়ে পেঁয়াজের বাজার উত্তপ্তকারী অসৎ ব্যবসায়ীরা যেকোনও অজুহাতে এবছরও একই সময়ে পেঁয়াজের বাজারকে আবার অস্থির করে ফায়দা লুটতে চায়। ইতোমধ্যেই এই চক্রটি নানা সময়ে নানা অজুহাতে এ পণ্যটির দাম বাড়িয়েছে কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা। ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরের পেঁয়াজ বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা দরে। যদিও সরকার অকারণে পেঁয়াজের এই মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকার একদিকে টিসিবির মাধ্যমে খোলাবাজারে স্বল্পমূল্যে পেঁয়াজ বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে, অপরদিকে অসাধু ব্যবসায়ীদের এই সিন্ডিকেটের কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করার পাশাপাশি যেকোনও অনিয়মের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতোমধ্যেই সরকারের এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়ে গেছে। পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণে মাঠে কাজ করছে সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থা। একাধিক সূত্র বাংলা ট্রিবিউনকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।

বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশন জানিয়েছে, দেশে প্রতিবছর পেঁয়াজের চাহিদা ২৪ লাখ মেট্রিক টন। এ বছর দেশে পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে ২৩ লাখ ৮২ হাজার মেট্রিক টন। কিন্তু প্রতিবছরই স্বাভাবিক নিয়মে উৎপাদিত পেঁয়াজের ৩০ শতাংশ পচে যায়। সে হিসেবে এ বছর পচে যাওয়া পেঁয়াজের পরিমাণ সাড়ে সাত লাখ মেট্রিক টন। এই ঘাটতি মেটাতে ভারত থেকে ১০ থেকে ১১ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানির লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র বলছে, ইতোমধ্যে ভারতের বিভিন্ন সীমান্ত বন্দর দিয়ে ৮ লাখ টনের বেশি পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। সেই হিসেবে দেশে এখন পেঁয়াজের কোনও ঘাটতি নেই। সরবরাহেও কোনও সমস্যা তৈরি হয়নি।

জানা গেছে, গত বছরের পেঁয়াজ নিয়ে কারসাজির হোতারা এ বছরও নানান অজুহাতে পেঁয়াজের বাজারকে অস্থিতিশীল করতে চাইছে। করোনা পরিস্থিতি, ঘূর্ণিঝড় আম্পান এবং পরবর্তীতে দেশের ৩৩ জেলায় বন্যাকে পুঁজি করে এবারও তারা পেঁয়াজের বাজারে অস্থিতিশীলতা ছড়াতে তৎপর। এসব অজুহাতের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে ভারতে বন্যা, অন্ধ্রপ্রদেশে পেঁয়াজের মোকামে শ্রমিকদের ধর্মঘট ও বাংলাদেশের মাওয়া ঘাটে ফেরি পারাপার বন্ধ থাকা। এসব অজুহাত দেখিয়ে ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজের দাম বাড়াচ্ছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন অঞ্চল বিশেষ করে উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলার পাশাপাশি ফরিদপুর ও পাবনায় পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। এ বছরের মাঠ থেকে সব পেঁয়াজ উঠে গেছে মধ্য ফেব্রুয়ারির আগেই। তখনও দেশে করোনার আবির্ভাব হয়নি। ঘূর্ণিঝড় আম্পান বাংলাদেশে আঘাত হেনেছে ১৬ মে থেকে ২১ মে পর্যন্ত সময়ে। তখন পেঁয়াজ কৃষকের ঘরে, ব্যবসায়ীর আড়তে। আর বন্যায় পেঁয়াজের কোনও ক্ষতি করার সুযোগই পায়নি। কারণ বন্যার সঙ্গে পেঁয়াজের কোনও সম্পর্ক নেই। যেসব জেলার ওপর দিয়ে বন্যা বয়ে গেছে সেসব জেলার মধ্যে ফরিদপুর ও পাবনা উল্লেখযোগ্য। কিন্তু এসব জেলার বন্যা পেঁয়াজে প্রভাব ফেলেনি বলে জানিয়েছে ফরিদপুর ও পাবনার জেলা প্রশাসকদ্বয়।

একইভাবে ভারতের বন্যায় এবছর সেখানকার পেঁয়াজে কোনও প্রভাব ফেলেনি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রমিক নেতারা দাবি করেছেন ভারতের শ্রমিকদের ধর্মঘট কোনোভাবেই পেঁয়াজের বাজারে প্রভাব বিস্তার করেনি।

এছাড়া মাওয়া ঘাটে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকার অজুহাতটিও ঠুনকো। কারণ ওপার থেকে রাজধানীতে আসতে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ফেরি এবং যমুনা সেতু খোলা রয়েছে। এছাড়া মাওয়া-শিমুলিয়ার অপর প্রান্ত কাওরাকান্দি ও কাঁঠালবাড়ীতে এই মুহূর্তে যেসব পণ্যবাহী ট্রাক আটকে আছে তার মধ্যে পেঁয়াজের একটি ট্রাকও আটকা নেই বলে বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন বিআইডব্লিউটিসি’র কর্মকর্তা মোখলেসুর রহমান।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার জানিয়েছেন, বন্যায় ফরিদপুরের কোথাও পেঁয়াজের ক্ষতি হয়েছে বলে শুনিনি। কারণ বন্যার সঙ্গে পেঁয়াজের কোনও সম্পর্ক নেই। সরবরাহ স্বাভাবিক ছিল। ফরিদপুরের বাজারে পেঁয়াজের দাম এখন নিম্নমুখী বলেও জানান তিনি।

অপরদিকে পাবনার জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ বলেন, ‘পাবনা পেঁয়াজ উৎপাদনকারী জেলাগুলোর মধ্যে অন্যতম। করোনা বলেন আর বন্যা বলেন, পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এসব অজুহাত এখানে প্রযোজ্য নয়। কারণ, বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জেলা প্রশাসনের টিম বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণে মাঠে রয়েছে। আমরা এখন পর্যন্ত বন্যায় পেঁয়াজের ক্ষতি হয়েছে এমন কোনও তথ্য পাইনি। কোনও এলাকার মানুষই বলেনি, যে বন্যায় তার ঘরের পেঁয়াজের ক্ষতি হয়েছে। কাজেই ব্যবসায়ীদের এমন অভিযোগ সঠিক নয়।’ তিনি জানিয়েছেন, এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। কোনও অবস্থাতেই পেঁয়াজ নিয়ে কোনও ধরনের কারসাজি সহ্য করা হবে না। দেশব্যাপী মনিটরিং চলছে। পেঁয়াজ নিয়ে টালবাহানা করলে কঠোর পদক্ষেপ নেবে সরকার। সচিব আরও জানিয়েছেন, ইতোমধ্যেই ভ্রাম্যমাণ আদালত মাঠে নেমেছেন। এটি অব্যাহত থাকবে। আর বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে টিসিবি’র মাধ্যমে খোলা বাজারে বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এসব সিদ্ধান্তের ফলে পেঁয়াজের বাজার নিম্নমুখী হতে শুরু করেছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, দেশে পর্যাপ্ত পরিমাণে পেঁয়াজ মজুত রয়েছে, আমদানিও রয়েছে স্বাভাবিক। পেঁয়াজের সংকট বা মূল্য বৃদ্ধির কোনও কারণ নেই। পেঁয়াজের অবৈধ মজুত বা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির মাধ্যমে মূল্য বাড়ানোর চেষ্টা করা হলে সরকার আইন মোতাবেক কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ