ঢাকা ০৯:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
লিট্‌ল স্টার মেধাবৃত্তি পরীক্ষা-২৪ সম্পন্ন নওগাঁর মান্দায় মিষ্টি আলুর গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে কুপিয়ে জখম নওগাঁয় শিক্ষার্থীদের দিয়ে এইচপিভি টিকাদান কার্যক্রম উদ্বোধন নওগাঁয় পাগলা শিয়ালের আক্রমন ও কামড়ে ৩ নারীসহ ৫ জন আহত কাজ না করে সরকারি টাকা লোপাট” এর সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনী ব্যবস্থা গ্রহনের দাবীতে পথ সভা মান্দায় মণ্ডপে মণ্ডপে নগদ অর্থ উপহার দিলেন বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ডা, ইকরামুল বারী টিপু নওগাঁ মান্দা একরুখী হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষকের অনিয়ম দেখার মত মনে হয় কেহ নাই ভারতে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-কে নিয়ে কটুক্তির প্রতিবাদে এনায়েতপুরে বিক্ষোভ মিছিল দি সিলেট ইসলামিক সোসাইটিরপঞ্চম শ্রেণি মেধাবৃত্তি প্রদান সম্পন্ন নর্থইস্ট নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থীদেরআন্দোলন, কলেজ বন্ধ ঘোষণা

আরব আমিরাতের পরে ইসরাইলকে বাহরাইনের স্বীকৃতিঃ এরপর কে?

এনামুল হিমেল
  • আপডেট সময় : ০২:৫৭:৫৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৪৫ বার পড়া হয়েছে

বাহরাইন - ইসরায়েল দ্বৈত

আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ইসরায়েলের সাথে সংযুক্ত আরব আমিরাতের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের মাস খানেকের পরেই ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দিল মধ্যপ্রাচ্যের আরেক তেলসমৃদ্ধ দেশ বাহরাইন।বাহরাইনের এ পদক্ষেপটি ছিল অনেকটা অনুমিত। গত মাসে আরব আমিরাতের ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেওয়ার পর থেকেই গুঞ্জনের শুরু। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বিস্তর হিসেব কষে একটা তালিকা তৈরি করেন, যেখানে উঠে আসে সৌদি আরবসহ অনেক দেশের নাম।

ইসরাইলকে আরব আমিরাতের স্বীকৃতি ও বিলিয়ন ডলারের বানিজ্য – কোনটাই ভালভাবে নেয়নি মুসলিমবিশ্ব। বিশেষ করে আজন্ম স্বাধিকারের জন্য জীবন বিলিয়ে আসা ফিলিস্তিনীরা এ টিকে “বিশ্বাসঘাতকতা” হিসেবে দেখতে শুরু করে। আরববিশ্বের রাজপথ থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম – সর্বত্র সেই ক্রুধের বহিঃপ্রকাশ ঘটে।

আরব দেশগুলো যদিও ‘ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে মেনে নেওয়া ও পশ্চিম তীর ফিলিস্তিনিদের জন্য অবমুক্ত করে দেওয়া’ চুক্তির জুড়ে দেয়, কিন্তু ইহুদীদের চরিত্র সম্পর্কে ফিলিস্তিনিদের চেয়ে ভালো আর কে জানে? তাই, শত্রুর সাথে সধর্মীদের এ ‘ভালবাসা’ মেনে নিতে পারেনি তারা। পূর্বেও তারা এধরনের প্রতিশ্রুতি পেয়েছিল। এগুলো কেবল অরুন্য রোদন।

বলা বাহুল্য, মধ্য প্রাচ্য ও ইসরাইলের এ মিলনে দুতিয়ালির কাজটি করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল ট্রাম্প। আসছে ৩ নভেম্বর মার্কিন নির্বাচনে দ্বিতীয় মেয়াদ নিশ্চিতকরণে মার্কিনীদের জন্য  এরচেয়ে ভালো টোপ আর কি হতে পারে! যেহেতু, মার্কিন প্রশাসন বরাবরই ইসরাইলী লবি দ্বারা প্রভাবিত, তাই মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইলের সুরক্ষা নিশ্চিত করা ও প্রভাব বিস্তারে সাহায্য করা সব মার্কিন প্রেসিডেন্টরাই গুরুত্ব দিতেন।

ডোনাল ট্রাম্প এ মিশনকে নিয়ে গেছেন অন্য মাত্রায়। তিনি নিজ মেয়ের জামাই জারেড কু শনারকে, যে খোদ ইহুদি বংশোদ্ভোত, মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি বিষয়ক দূত হিসেবে নিযুক্ত করেন। ডোনাল ট্রাম্পের অনেক উপদেষ্টার যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও ‘জামাই’ কুশনারকে নিয়ে প্রশ্ন উঠেনি। মধ্যপ্রাচ্যে অস্ত্র বিক্রি থেকে শুরু করে ইসরাইলের স্বীকৃতি আদায় সব যায়গায় তিনি সফল। পূর্বের সব মার্কিন প্রেসিডেন্ট যা করতে পারেননি, কুশনার সেটি করে দেখিয়েছেন। তাৎপর্যের বিচারে ত্রাম্প ও জ্যারেড ক্যুশনারের এ প্রচেষ্টা রিপাবলিকানদের জন্য তুরুপের তাস।

প্রথমে সংযুক্ত আরব আমিরাত এরপর বাহরাইনের ইসরাইলকে স্বীকৃতি – চুক্তিটি এমন সময় সম্পাদিত হল, যখন ট্রাম্প কোভিড১৯ সংক্রমন ঠেকাতে চরমভাবে ব্যর্থ এবং কয়েক মিলিয়ন মার্কিনী কাজ হারিয়ে বেকার ভাতার জন্য আবেদন করে বসে আছে। এর উপর চীনের সাথে আমেরিকার ভয়াবহ বানিজ্য ঘাটতি ও কপালে ভাঁজ ফেলে দেওয়ার মতো সামরিক উত্থান। এবং দীর্ঘদিন যাবত ইরানকে নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারার ব্যর্থতা। এর উপর সবকিছু ছাপিয়ে আসছে নভেম্বরে জাতীয় নির্বাচন, যেখানে ট্রাম্প ডেমোক্র্যাট জো বাইডেনের কাছে প্রাথমিক জরিপে পিছিয়ে আছে।

ইসরায়েলের সাথে সম্পর্কের শিথিলতা এই অঞ্চলে ইরানের হুমকির বিষয়ে ভাগাভাগি করা শঙ্কার প্রেক্ষাপটের মধ্যে এসেছে। এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হল মধ্য প্রাচ্যের অন্যতম রাজনৈতিক ও ধর্মীয় প্রভাবশালী দেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র সৌদি আরব ওদের পথ অনুসরণ করবে কিনা।

লেখকঃ ইংরেজি প্রভাষক, সিলেট ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

আরব আমিরাতের পরে ইসরাইলকে বাহরাইনের স্বীকৃতিঃ এরপর কে?

আপডেট সময় : ০২:৫৭:৫৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০

ইসরায়েলের সাথে সংযুক্ত আরব আমিরাতের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের মাস খানেকের পরেই ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দিল মধ্যপ্রাচ্যের আরেক তেলসমৃদ্ধ দেশ বাহরাইন।বাহরাইনের এ পদক্ষেপটি ছিল অনেকটা অনুমিত। গত মাসে আরব আমিরাতের ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেওয়ার পর থেকেই গুঞ্জনের শুরু। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বিস্তর হিসেব কষে একটা তালিকা তৈরি করেন, যেখানে উঠে আসে সৌদি আরবসহ অনেক দেশের নাম।

ইসরাইলকে আরব আমিরাতের স্বীকৃতি ও বিলিয়ন ডলারের বানিজ্য – কোনটাই ভালভাবে নেয়নি মুসলিমবিশ্ব। বিশেষ করে আজন্ম স্বাধিকারের জন্য জীবন বিলিয়ে আসা ফিলিস্তিনীরা এ টিকে “বিশ্বাসঘাতকতা” হিসেবে দেখতে শুরু করে। আরববিশ্বের রাজপথ থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম – সর্বত্র সেই ক্রুধের বহিঃপ্রকাশ ঘটে।

আরব দেশগুলো যদিও ‘ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে মেনে নেওয়া ও পশ্চিম তীর ফিলিস্তিনিদের জন্য অবমুক্ত করে দেওয়া’ চুক্তির জুড়ে দেয়, কিন্তু ইহুদীদের চরিত্র সম্পর্কে ফিলিস্তিনিদের চেয়ে ভালো আর কে জানে? তাই, শত্রুর সাথে সধর্মীদের এ ‘ভালবাসা’ মেনে নিতে পারেনি তারা। পূর্বেও তারা এধরনের প্রতিশ্রুতি পেয়েছিল। এগুলো কেবল অরুন্য রোদন।

বলা বাহুল্য, মধ্য প্রাচ্য ও ইসরাইলের এ মিলনে দুতিয়ালির কাজটি করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল ট্রাম্প। আসছে ৩ নভেম্বর মার্কিন নির্বাচনে দ্বিতীয় মেয়াদ নিশ্চিতকরণে মার্কিনীদের জন্য  এরচেয়ে ভালো টোপ আর কি হতে পারে! যেহেতু, মার্কিন প্রশাসন বরাবরই ইসরাইলী লবি দ্বারা প্রভাবিত, তাই মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইলের সুরক্ষা নিশ্চিত করা ও প্রভাব বিস্তারে সাহায্য করা সব মার্কিন প্রেসিডেন্টরাই গুরুত্ব দিতেন।

ডোনাল ট্রাম্প এ মিশনকে নিয়ে গেছেন অন্য মাত্রায়। তিনি নিজ মেয়ের জামাই জারেড কু শনারকে, যে খোদ ইহুদি বংশোদ্ভোত, মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি বিষয়ক দূত হিসেবে নিযুক্ত করেন। ডোনাল ট্রাম্পের অনেক উপদেষ্টার যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও ‘জামাই’ কুশনারকে নিয়ে প্রশ্ন উঠেনি। মধ্যপ্রাচ্যে অস্ত্র বিক্রি থেকে শুরু করে ইসরাইলের স্বীকৃতি আদায় সব যায়গায় তিনি সফল। পূর্বের সব মার্কিন প্রেসিডেন্ট যা করতে পারেননি, কুশনার সেটি করে দেখিয়েছেন। তাৎপর্যের বিচারে ত্রাম্প ও জ্যারেড ক্যুশনারের এ প্রচেষ্টা রিপাবলিকানদের জন্য তুরুপের তাস।

প্রথমে সংযুক্ত আরব আমিরাত এরপর বাহরাইনের ইসরাইলকে স্বীকৃতি – চুক্তিটি এমন সময় সম্পাদিত হল, যখন ট্রাম্প কোভিড১৯ সংক্রমন ঠেকাতে চরমভাবে ব্যর্থ এবং কয়েক মিলিয়ন মার্কিনী কাজ হারিয়ে বেকার ভাতার জন্য আবেদন করে বসে আছে। এর উপর চীনের সাথে আমেরিকার ভয়াবহ বানিজ্য ঘাটতি ও কপালে ভাঁজ ফেলে দেওয়ার মতো সামরিক উত্থান। এবং দীর্ঘদিন যাবত ইরানকে নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারার ব্যর্থতা। এর উপর সবকিছু ছাপিয়ে আসছে নভেম্বরে জাতীয় নির্বাচন, যেখানে ট্রাম্প ডেমোক্র্যাট জো বাইডেনের কাছে প্রাথমিক জরিপে পিছিয়ে আছে।

ইসরায়েলের সাথে সম্পর্কের শিথিলতা এই অঞ্চলে ইরানের হুমকির বিষয়ে ভাগাভাগি করা শঙ্কার প্রেক্ষাপটের মধ্যে এসেছে। এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হল মধ্য প্রাচ্যের অন্যতম রাজনৈতিক ও ধর্মীয় প্রভাবশালী দেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র সৌদি আরব ওদের পথ অনুসরণ করবে কিনা।

লেখকঃ ইংরেজি প্রভাষক, সিলেট ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ।