সিলেট মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় অটোরিক্সা (সিএনজি)’র কিছু সংখ্যক অসৎ চালকদের সাথে ছিনতাইকারীদের যোগসাজশ রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় অটোরিক্সা (সিএনজি)’র স্ট্যান্ডগুলো থেকে মধ্য রাতে যাত্রী পরিবহনের নামে নিরাপদে বাসাবাড়িতে পৌছে দেবে বলে ছিনতাইকারীদের খপ্পরে ফেলে যাত্রীর সর্বস্ব খুয়ে অথবা অজ্ঞান করে ফেলে দেয়ার ঘটনা ঘটছে।
ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত বাসযাত্রীরা দক্ষিণ সুরমার কদমতলীতে নামারপর মধ্যরাতে সেখান থেকে গন্তব্যে পৌঁছার জন্য অটোরিক্সা (সিএনজি) রিজার্ভ করেন।
কিন্তু যাত্রীরা অটোরিক্সা (সিএনজি) চালককে নিরাপদ রাস্তা দিয়ে চলার জন্য বললে, চালক সে রাস্তা দিয়ে না গিয়ে তাদের পরিকল্পিত রাস্তা দিয়ে যাওয়ার পথে মাঝ রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে অপরিচিত ২/৩ জনের সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্রকে গাড়িতে তোলে যাত্রীর সর্বস্ব লুটে নেয়া হয়। যাত্রীরা ছিনতাইকারী ও অটোরিক্সা (সিএনজি) চালককে চিনে ফেললে ওই যাত্রীকে অজ্ঞান করে লাশ করার চেষ্টা করে। এমন কিছু তথ্য কিছু দিন ধরে বিভিন্ন যাত্রীদের কাছ থেকে পাওয়া গেছে।
মধ্যরাতে অসহায় যাত্রীরা কদমতলী বাস ও ট্রেন থেকে নামারপর অটোরিক্সা (সিএনজি) রিজার্ভ করার প্রয়োজন জরুরী হয়ে পড়ে। এই সময় ঘাপটি মেরে থাকা কিছু সংখ্যক অসৎ অটোরিক্সা (সিএনজি) চালকরা সুযোগ বুঝে যাত্রী সংগ্রহ করে পরিবহনের নামে নিরীহ যাত্রীদেরকে ছিনতাইকারীদের ফাঁদে ফেলে সর্বস্ব লুট করে।
অনেক সময় ভুক্তভোগী যাত্রীরা ঘটনার শিকার হলেও প্রমাণের অভাবে অভিযোগ করার সুযোগ পায় না। মধ্যরাতে ঘটনার সময় ওই স্থানগুলোতে পেট্রোল পুলিশকে দেখতে পাওয়া যায় না।
অটোরিক্সা (সিএনজি) চালকরা যাত্রীর সাথে রিজার্ভ কন্ট্রাক করলেও চালকরা যাত্রীর সাথে কথা না বলে মাঝ রাস্তায় ব্রেক দিয়ে ২/৩ জন যাত্রী বেশী ছিনতাইকারীকে গড়িতে তোলে যাত্রীর সর্বস্ব লুট করে নেয়া হয়। এছাড়া অটোরিক্সা (সিএনজি) চালকের সহযোগিতায় যাত্রীকে অজ্ঞান করে ফেলা হয়।
ভুক্তভোগী কয়েকজন যাত্রীদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, বিগত কয়েক বছর ধরে অটোরিক্সা (সিএনজি) চালকের সহযোগিতায় বহু মানুষ ছিনতাই ও অজ্ঞান ঘটনার শিকার হয়েছে।
মাঝে মাঝে যে অজ্ঞাতনামা লাশ পাওয়া যায়, তার মধ্যে অসৎ অটোরিক্সা (সিএনজি) চালক ও ছিনতাইকারীদের হাত রয়েছে। ছিনতাইকারীরা মধ্য রাতে যাত্রীকে অজ্ঞান করার মত সরঞ্জামাদি সঙ্গে নিয়ে ওৎপেতে থাকে। দক্ষিণ সুরমার কদমতলী মুক্তিযোদ্ধা চত্বর, কীনব্রিজের দক্ষিণ মুখ, হুমায়ুন রশীদ চত্বর, চন্ডিপুল সামাদ আজাদ চত্বর, শাহজালাল সেতুর উভয় প্রান্তে মধ্য রাতে অটোরিক্সা (সিএনজি)’র স্ট্যান্ড বানিয়ে যাত্রীদের পরিবহনের নামে ছিনতাইকারীদের খপ্পরে ফেলে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক যাত্রী গত ২৩ মে হানিফ এন্টারপ্রাইজ বাস যোগে ঢাকা থেকে রাত দেড়টার সময় হুমায়ুন রশীদ চত্বরে এসে পৌঁছেন। এ সময় চত্বরের পাশে থাকা অটোরিক্সা (সিএনজি) স্ট্যান্ড থেকে থ-১২-৫৪১৭ নাম্বারের অটোরিক্সা (সিএনজি) রিজার্ভ করে আম্বরখানার উদ্দেশ্যে রওনা হন। চালককে বলা হয়েছিল সোবহানঘাট পয়েন্ট হয়ে আম্বারখানায় যাবে।
কিন্তু চালক তার পরিকল্পনা অনুযায়ী যাত্রীকে কিনব্রিজের দক্ষিণ মুখে পৌঁছামাত্র ব্রেক করে ৩ জন বিশ্রি চেহারার মানুষকে অটোরিক্সা (সিএনজি)-তে উঠানোর সুযোগ করে দিলে, তখন যাত্রী চালককে বাধা দেন। অনেক সময় তর্কবির্তক করলে চালক এই ছিনতাইকারীদের ইশারা দিয়ে সরিয়ে দেন। ফলে ওই যাত্রী ছিনতাকারীদের হাত থেকে রক্ষা পান। পরে যাত্রীকে কথা মত আম্বরখানায় পৌছে দেয়।