শিরোনাম
দি সিলেট ইসলামিক সোসাইটিরপঞ্চম শ্রেণি মেধাবৃত্তি প্রদান সম্পন্ন নর্থইস্ট নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থীদেরআন্দোলন, কলেজ বন্ধ ঘোষণা জগন্নাথপুরে আফজল হত্যার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবীতে মানববন্ধন জগন্নাথপুর থানার এসআই সাব্বির হাসান সততা ও নিষ্ঠার সাথে পালন করছেন নিজ দায়িত্ব জুলুমের শাস্তি দুনিয়াতে দিয়ে দেওয়া হয় – হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী অধ্যাপক ডা: ফরহাদ হালিম ডোনারকে গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ড্যাব সিলেট আমিরাত প্রবাসীদের জন্য সুখবর, ভিসা নবায়নের সুযোগ বীর মুক্তিযোদ্ধা ব্যারিস্টার আরশ আলীর সুস্থতার জন্য গণতন্ত্রী পার্টি সিলেট দোয়া কামনা হামলার শিকার হলেন আবুল হোসেন শরীফ সিলেট নগরীতে দুর্ধর্ষ চুরি
রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৪৭ অপরাহ্ন

জুলুমের শাস্তি দুনিয়াতে দিয়ে দেওয়া হয় – হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী

রিপোটারের নাম
প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ২ আগস্ট, ২০২৪

হে মানুষ! তোমাদের অনাচার তোমাদের ওপরই পতিত হয়ে থাকে। পার্থিব জীবনের সুখ (সাময়িক) ভোগ করে নাও; পরে আমার কাছেই তোমাদের প্রত্যাবর্তন করতে হবে তখন আমি জানিয়ে দেব তোমরা যা করতে। [সুরা : ইউনুস, আয়াত : ২৩ (শেষাংশ)]

তাফসির : এই আয়াতের প্রথম অংশে বলা হয়েছিল, বিপদ থেকে মুক্তি পেলে মানুষ আল্লাহর অবাধ্য হয়ে পড়ে। বেপরোয়া জীবন যাপন করতে থাকে। মানুষের ওপর অন্যায়, অবিচার ও জুলুম করতে থাকে। আয়াতের এই অংশে বলা হয়েছে, জুলুম করে মানুষ নিজেরই ক্ষতি করে। অন্যায়—অনাচারের প্রতিফল দুনিয়ায়ই তাকে ভোগ করতে হয়। এরপর পরকালে চূড়ান্ত বিচার হবে। তখন জীবনের সব কাজকর্মের হিসাব নেওয়া হবে। সেখানে ন্যায়সংগতভাবে সব কাজের প্রতিদান দেওয়া হবে।

মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘দুটি গুনাহ এমন আছে, যার শাস্তি পরকালে অবধারিত থাকা সত্ত্বেও দুনিয়ায়ও দিয়ে দেওয়া হয়। একটি হলো, কারো ওপর জুলুম করা; অন্যটি হলো, আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা। ’ (তিরমিজি ও আবু দাউদ)
জুলুমের ইহকালীন ও পরকালীন ক্ষতি : পরস্পর ভ্রাতৃত্ব ও স¤প্রীতির চর্চা করার মাধ্যমেই শান্তি আসে। সমাজে একে অন্যের মধ্যে মেলবন্ধন তৈরি হয়। ধনী—গরিবের মধ্যে আস্থা দৃঢ় হয়। এতে সমাজের উন্নয়ন হয়, রাষ্ট্রের উন্নতি হয়। সচ্ছলতা বৃদ্ধি পায়। সর্বত্র শান্তি বিরাজ করে। পক্ষান্তরে জুলুম সমাজের শান্তি ও স্থিতি বিনষ্ট করে। সুখ ও সমৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত করে। তাই ইসলাম মানুষকে ইনসাফে উদ্বুদ্ধ করেছে। জুলুম করতে নিষেধ করেছে।

হাদিসে কুদসিতে রয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, “আল্লাহ বলেন, ‘হে আমার বান্দা! আমি নিজের ওপর জুলুম হারাম করেছি এবং এই জুলুমকে তোমাদের মধ্যেও হারাম করেছি। সুতরাং তোমরা পরস্পর জুলুম কোরো না। (মুসলিম শরিফ : হা. ৬৭৩৭)

মানুষ মনে করে, অন্যকে কষ্ট দিয়ে সে সুখ পাবে। অন্যের সম্পদ লুণ্ঠন করে সে লাভবান হবে। অন্যের সম্মান বিনষ্ট করে সে মর্যাদাবান হবে। অথচ প্রকৃত অবস্থা এর ব্যতিক্রম। জুলুমের প্রতিদান জালিমকে পেতেই হবে। কেবল পরকালেই নয়, দুনিয়ায়ও মানুষকে তার অপকর্মের কুফল ভোগ করতে হয়। বিশেষত জুলুম—অত্যাচার ও অন্যের অধিকার কেড়ে নিলে দুনিয়ায়ই আজাব আসে।

জুলুম বিভিন্নভাবে করা হয়। কখনো দৈহিকভাবে, কখনো মানসিকভাবে। কখনো অপমান করে, কখনো মিথ্যাচার করে। কখনো দোষ অন্বেষণ করে, কখনো অপবাদ আরোপ করে। সর্বাবস্থায় জালিমকে এর প্রতিফল পেতে হয়।

মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ জালিমকে অবকাশ দেন। অবশেষে যখন তাকে পাকড়াও করেন তখন তার পলায়নের অবকাশ থাকে না। ’ (বুখারি শরিফ : হা. ৪৬৮৬) তারপর কেয়ামতের দিন এই জুলুমের জন্য কঠিন শাস্তি দেওয়া হবে।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমরা জুলুম থেকে বেঁচে থেকো, কেননা জুলুম কেয়ামতের দিন কঠিন অন্ধকার আকার ধারণ করবে। ’ (মুসলিম শরিফ : হা. ৬৭৪১)

রাসুলুল্লাহ (সা.) আরো বলেন, ‘কেউ যদি তার কোনো ভাইয়ের সম্মানহানি কিংবা কোনো ক্ষতি করে থাকে, তবে আজই (দুনিয়ায়ই) তার কাছ থেকে তা বৈধ করে নেওয়া উচিত (ক্ষমা চেয়ে নেওয়া এবং ক্ষতিপূরণ দিয়ে দেওয়া উচিত)। আর কাজটি সেই ভয়াবহ দিন আসার আগেই করতে হবে, যেদিন টাকা—কড়ি দিয়ে কোনো প্রতিকার পাওয়া যাবে না। জালিমের কাছে কোনো নেক আমল থাকলে তার জুলুমের সমপরিমাণ নেক আমল মজলুমকে দিয়ে দেওয়া হবে। আর তার কোনো নেক আমল না থাকলে ওই মজলুমের পাপের বোঝা জালিমের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হবে। (সহিহ বুখারি ও জামে তিরমিজি)
মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে হেফাজত করুন আল্লাহুম্মা আমিন।

লেখক : বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ লেখক ও কলামিস্ট হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী, প্রতিষ্ঠিতা সভাপতি জকিগঞ্জ উপজেলা সচেতন নাগরিক ফোরাম সিলেট।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ