ঢাকা ০৩:৫১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫, ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন ::
আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন এর জন্য যোগাযোগ করুনঃ ০১৫৭২-৬৩১৭৪৫
বিজ্ঞপ্তিঃ ::
আমাদের পত্রিকাতে সারাদেশে সাংবাদিক নিয়োগ চলছে। আগ্রহীরা সিভি পাঠিয়ে দিন ই-মেইলেঃ sylhetertimes24@gmail.com

মাদক সম্রাট ও চুর আবুল কালাম গংয়ের বিরুদ্ধে গ্রামবাসী ঐক্যবদ্ধ

নিজস্ব প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৪:৫৬:১৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫ ১৫ বার পড়া হয়েছে
সিলেটের টাইমস এর সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

মোঃ ফারুক শাল্লা (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি :

সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার আটগাঁও ইউনিয়নের মামুদনগর গ্রামের খুনি, মাদক সম্রাট ও চুরির গডফাদার আবুল কালাম ও আকিরুল মিয়া গংদের প্রতিরোধ করে শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষায় এলাকার হাজারো মানুষ সম্মিলিত হয়ে সামাজিক ঐক্যতা গড়ে তুলতে এক সভার আয়োজন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৫ মে) বিকালে মামুদনগর বাজার সংলগ্ন মাদক ও চুরির প্রতিরোধ কল্পে এলাকাবাসীর একাত্মতায় সভায় উপস্থিতগণ গণস্বাক্ষর প্রদান করে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন। এই সভা পূর্বে সমগ্র এলাকায় মাইকিং করে সবাইকে জানানো হয়।

মামুদনগর গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তি মাওলানা আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, শঙ্কু শেখর চৌধুরী, জুনেদ মিয়া, মাওলানা শফিকুল ইসলাম, মাওলানা নূর মোহাম্মদ, মাসুদ আল কাউসার, জহিরুল ইসলাম, মোতালিব মিয়া, শফি মিয়া, আজমান মিয়া প্রমুখ।

চুরি হওয়া গাড়ির মালিকের ভাই জুনেদ মিয়া বলেন, আবুল কালামের ছেলে আকিরুল মিয়া আমার ভাই শাহিদুলের হোন্ডা কয়েকমাস পূর্বে চুরি করে নিয়ে যায় হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ৷ খবর পেয়ে আমরা শায়েস্তাগঞ্জের সাবেক কমিশনারের মাধ্যমে আকিরুল সহ গাড়ি উদ্ধার করি। ঐ এলাকার মানুষের সমন্বয়ে আকিরুলের বাবা আবুল কালাম নিজে উপস্থিত হয়ে হোন্ডা চুরির দায়ে দুই দিনের মধ্যে সর্বমোট ৩লক্ষ ৪০হাজার টাকা পরিশোধ করবে বলে স্ট্যাম্পে স্বীকারোক্তি দেয়। এই হচ্ছে স্ট্যাম্প ও তাদের স্বীকারোক্তির ভিডিও। কিন্তু এখন পর্যন্ত আবুল কালাম এই টাকা পরিশোধ করে নাই। অনেকের মাধ্যমে টাকা চাইতে গেলে উল্টো তারা আমাদের হুমকি দেয়। আপনারা জানেন এই কালাম ও তার ছেলেরা শাহিদুলের ভাইকে খুন করেছে যার মামলা কোর্টে এখনও চলমান। আমি নিরুপায় হয়ে আপনাদের শরনাপন্ন হয়েছি। এদের মাদক ব্যবসা ও চুরির কারণে ধ্বংস হচ্ছে এলাকার মানুষ। আমি আপানদের মাধ্যমে সুষ্ঠু বিচার চাই।

সভায় অন্যান্য বক্তারা বলেন, আবুল কালাম ও তার ছেলে আকিরুল খুনি, মাদক ব্যবসায়ী ও চোরের গডফাদার। আবুল কালাম ছোট থেকেই চুরি করে আসছে। মনে হচ্ছে এদের কাছে আমরা অসহায়! সুনির্দিষ্ট প্রমাণের ভিত্তিতে বলা যাচ্ছে শাহিদুলের হোন্ডা চোর আবুল কালাম ও তার ছেলে আকিরুল মিয়া। আকিরুলের বাড়িতে মাঝে মধ্যে কিছু অপরিচিত লোক এসে এদিক-সেদিক ঘুরাঘুরি করত। তারা যেদিন এখানে থেকে চলে যায় এর পরেই শুনাযায় বিভিন্ন দিকে চুরির ঘটনা। এই এলাকার এবং আশেপাশের আরো অনেক হোন্ডা চুরি হয়েছে। মসজিদের দান বাক্সের টাকা, ব্যাটারি, স্বর্ণ, আরো অনেক কিছু চুরি হয়েছে। শুধু চুরিই নয় মাদকের ব্যবসা করে আজ জিরো থেকে হিরো হয়েছে এই আবুল কালামের পরিবার। সে সর্বজনীন রাস্তা দখলে নিয়েছে, গুরুস্তানের মধ্যে আলাদা মাজার তৈরি করছে ক্ষমতার দাপটে। সবসময় মসজিদ পাশে সহ যত্রতত্র ওপেনলি মাদক ব্যবহার হচ্ছে। বাধা দিলেই ঘটে বিপত্তি। আবুল কালাম গংদের মাদকের ছোবলে গ্রাম তথা সমাজ এবং আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম ধ্বংসের মুখে ধাবিত হচ্ছে। যদি এখনই তাদের মাদক এবং চুরির প্রতিরোধ করা সম্ভব না হয় তাহলে আমরা শান্তিতে থাকতে পারব না।

শাল্লা উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুদ আল কাউসার বলেন, এর আগে আবুল কালামের ছেলের চুরির বিচার আমি নিজেও করছি দিরাই কল্যাণী গ্রামে। সে নিজে চুরির দায় স্বীকার করেছে। আমারও গাড়ি কিছু দিন আগে চুরি হইছে থানায় জিডি করছি। শুনেছি সে ড্রাগ ব্যবসার সাথে জড়িত। আকিরুল ও তার সহযোগীদের ধরতে আপনারা প্রশাসনকে সহযোগিতা করুন। তাকে ধরলে সব বেরিয়ে আসবে। অন্যায় যে করুক তার শাস্তির মাধ্যমে আমরা কলংক মুক্ত হতে চাই।

সভার সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমরা প্রমাণের ভিত্তিতে পেয়েছি স্বীকৃত চোর আকিরুল ও তার বাবা আবুল কালাম। আজকের বৈঠকে যেহেতু তারা নাই, সেহেতু আবুল কালামকে কয়েকজন গণ্যমান্য মানুষ সব বিষয়ে অবগত করুন। সে নিজে উপস্থিত হয়ে আগামী সভায় তাকে কিছু বলার সুযোগ দেওয়া প্রয়োজন। আমাদের পরবর্তী সভায় আবুল কালামদের উপস্থিতির মাধ্যমে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিব। ঐ সিদ্ধান্তের জন্য আজকে সভার মুলতবি ঘোষনা করে উপস্থিত হাজারো মানুষকে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে অনুরোধ করেন।

মটর সাইকেল চুরির দায়ে অভিযুক্ত আকিরুলের বাবা আবুল কালাম চুরির দায় সরাসরি স্বীকার না করলেও, শাহিদুলের হোন্ডার ১লক্ষ ৫হাজার টাকা দিয়েছেন বলে স্বীকার করেন। তিনি আরও বলেন, স্ট্যাম্পের স্বাক্ষর আমারই কিন্তু স্ট্যাম্পের লেখাগুলো জুনেদ মিথ্যা লেখছে। আর অন্যান্য যে বিষয় ইতা গ্রামবাসী সব আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতাছে।

জানতে চাইলে শাল্লা থানার অফিসার ইনচার্জ শফিকুল ইসলাম বলেন, মাদকদ্রব্য ও চুরি প্রতিরোধ করতে এবং এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় উনারা সামাজিকভাবে যে ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন আমি এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। এই ব্যাপারে উনারা আমাকে জানালে অবশ্যই সহযোগিতা করব৷

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

মাদক সম্রাট ও চুর আবুল কালাম গংয়ের বিরুদ্ধে গ্রামবাসী ঐক্যবদ্ধ

আপডেট সময় : ০৪:৫৬:১৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫

মোঃ ফারুক শাল্লা (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি :

সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার আটগাঁও ইউনিয়নের মামুদনগর গ্রামের খুনি, মাদক সম্রাট ও চুরির গডফাদার আবুল কালাম ও আকিরুল মিয়া গংদের প্রতিরোধ করে শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষায় এলাকার হাজারো মানুষ সম্মিলিত হয়ে সামাজিক ঐক্যতা গড়ে তুলতে এক সভার আয়োজন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৫ মে) বিকালে মামুদনগর বাজার সংলগ্ন মাদক ও চুরির প্রতিরোধ কল্পে এলাকাবাসীর একাত্মতায় সভায় উপস্থিতগণ গণস্বাক্ষর প্রদান করে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন। এই সভা পূর্বে সমগ্র এলাকায় মাইকিং করে সবাইকে জানানো হয়।

মামুদনগর গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তি মাওলানা আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, শঙ্কু শেখর চৌধুরী, জুনেদ মিয়া, মাওলানা শফিকুল ইসলাম, মাওলানা নূর মোহাম্মদ, মাসুদ আল কাউসার, জহিরুল ইসলাম, মোতালিব মিয়া, শফি মিয়া, আজমান মিয়া প্রমুখ।

চুরি হওয়া গাড়ির মালিকের ভাই জুনেদ মিয়া বলেন, আবুল কালামের ছেলে আকিরুল মিয়া আমার ভাই শাহিদুলের হোন্ডা কয়েকমাস পূর্বে চুরি করে নিয়ে যায় হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ৷ খবর পেয়ে আমরা শায়েস্তাগঞ্জের সাবেক কমিশনারের মাধ্যমে আকিরুল সহ গাড়ি উদ্ধার করি। ঐ এলাকার মানুষের সমন্বয়ে আকিরুলের বাবা আবুল কালাম নিজে উপস্থিত হয়ে হোন্ডা চুরির দায়ে দুই দিনের মধ্যে সর্বমোট ৩লক্ষ ৪০হাজার টাকা পরিশোধ করবে বলে স্ট্যাম্পে স্বীকারোক্তি দেয়। এই হচ্ছে স্ট্যাম্প ও তাদের স্বীকারোক্তির ভিডিও। কিন্তু এখন পর্যন্ত আবুল কালাম এই টাকা পরিশোধ করে নাই। অনেকের মাধ্যমে টাকা চাইতে গেলে উল্টো তারা আমাদের হুমকি দেয়। আপনারা জানেন এই কালাম ও তার ছেলেরা শাহিদুলের ভাইকে খুন করেছে যার মামলা কোর্টে এখনও চলমান। আমি নিরুপায় হয়ে আপনাদের শরনাপন্ন হয়েছি। এদের মাদক ব্যবসা ও চুরির কারণে ধ্বংস হচ্ছে এলাকার মানুষ। আমি আপানদের মাধ্যমে সুষ্ঠু বিচার চাই।

সভায় অন্যান্য বক্তারা বলেন, আবুল কালাম ও তার ছেলে আকিরুল খুনি, মাদক ব্যবসায়ী ও চোরের গডফাদার। আবুল কালাম ছোট থেকেই চুরি করে আসছে। মনে হচ্ছে এদের কাছে আমরা অসহায়! সুনির্দিষ্ট প্রমাণের ভিত্তিতে বলা যাচ্ছে শাহিদুলের হোন্ডা চোর আবুল কালাম ও তার ছেলে আকিরুল মিয়া। আকিরুলের বাড়িতে মাঝে মধ্যে কিছু অপরিচিত লোক এসে এদিক-সেদিক ঘুরাঘুরি করত। তারা যেদিন এখানে থেকে চলে যায় এর পরেই শুনাযায় বিভিন্ন দিকে চুরির ঘটনা। এই এলাকার এবং আশেপাশের আরো অনেক হোন্ডা চুরি হয়েছে। মসজিদের দান বাক্সের টাকা, ব্যাটারি, স্বর্ণ, আরো অনেক কিছু চুরি হয়েছে। শুধু চুরিই নয় মাদকের ব্যবসা করে আজ জিরো থেকে হিরো হয়েছে এই আবুল কালামের পরিবার। সে সর্বজনীন রাস্তা দখলে নিয়েছে, গুরুস্তানের মধ্যে আলাদা মাজার তৈরি করছে ক্ষমতার দাপটে। সবসময় মসজিদ পাশে সহ যত্রতত্র ওপেনলি মাদক ব্যবহার হচ্ছে। বাধা দিলেই ঘটে বিপত্তি। আবুল কালাম গংদের মাদকের ছোবলে গ্রাম তথা সমাজ এবং আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম ধ্বংসের মুখে ধাবিত হচ্ছে। যদি এখনই তাদের মাদক এবং চুরির প্রতিরোধ করা সম্ভব না হয় তাহলে আমরা শান্তিতে থাকতে পারব না।

শাল্লা উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুদ আল কাউসার বলেন, এর আগে আবুল কালামের ছেলের চুরির বিচার আমি নিজেও করছি দিরাই কল্যাণী গ্রামে। সে নিজে চুরির দায় স্বীকার করেছে। আমারও গাড়ি কিছু দিন আগে চুরি হইছে থানায় জিডি করছি। শুনেছি সে ড্রাগ ব্যবসার সাথে জড়িত। আকিরুল ও তার সহযোগীদের ধরতে আপনারা প্রশাসনকে সহযোগিতা করুন। তাকে ধরলে সব বেরিয়ে আসবে। অন্যায় যে করুক তার শাস্তির মাধ্যমে আমরা কলংক মুক্ত হতে চাই।

সভার সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমরা প্রমাণের ভিত্তিতে পেয়েছি স্বীকৃত চোর আকিরুল ও তার বাবা আবুল কালাম। আজকের বৈঠকে যেহেতু তারা নাই, সেহেতু আবুল কালামকে কয়েকজন গণ্যমান্য মানুষ সব বিষয়ে অবগত করুন। সে নিজে উপস্থিত হয়ে আগামী সভায় তাকে কিছু বলার সুযোগ দেওয়া প্রয়োজন। আমাদের পরবর্তী সভায় আবুল কালামদের উপস্থিতির মাধ্যমে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিব। ঐ সিদ্ধান্তের জন্য আজকে সভার মুলতবি ঘোষনা করে উপস্থিত হাজারো মানুষকে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে অনুরোধ করেন।

মটর সাইকেল চুরির দায়ে অভিযুক্ত আকিরুলের বাবা আবুল কালাম চুরির দায় সরাসরি স্বীকার না করলেও, শাহিদুলের হোন্ডার ১লক্ষ ৫হাজার টাকা দিয়েছেন বলে স্বীকার করেন। তিনি আরও বলেন, স্ট্যাম্পের স্বাক্ষর আমারই কিন্তু স্ট্যাম্পের লেখাগুলো জুনেদ মিথ্যা লেখছে। আর অন্যান্য যে বিষয় ইতা গ্রামবাসী সব আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতাছে।

জানতে চাইলে শাল্লা থানার অফিসার ইনচার্জ শফিকুল ইসলাম বলেন, মাদকদ্রব্য ও চুরি প্রতিরোধ করতে এবং এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় উনারা সামাজিকভাবে যে ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন আমি এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। এই ব্যাপারে উনারা আমাকে জানালে অবশ্যই সহযোগিতা করব৷